দুর্নীতি জাতীয় জীবনে অভিশাপ স্বরূপ।-ভাব-সম্প্রসারণ
দুর্নীতি জাতীয় জীবনে
অভিশাপ স্বরূপ।
ভাব-সম্প্রসারণ : যেকোনাে
জাতির উন্নয়নে
দুনীতি একটি
বড়াে বাধা।
কোনাে জাতির
ওপর যখন দুনীতি
ভর করে তখন
সেই জাতির
উন্নয়ন মারাত্মকভাবে
ব্যাহত হয় এবং
সমাজ ও রাষ্ট্রের
রন্ধ্রে রন্ধ্রে
জন্ম নেয়
ব্যাপক অরাজকতা
। সুতরাং
দুনীতি একটি
জাতির জন্য
অভিশাপেরই বিষয়
।
সাধারণত
ব্যক্তিগত স্বার্থোদ্ধারের
জন্য ক্ষমতার
অপব্যবহার করাই
হলাে দুর্নীতি।
অর্থাৎ মানুষ
স্বেচ্ছাচারিতার মধ্য
দিয়ে প্রচলিত
নিয়ম-নীতি
লঙ্ঘন করে নিজের
স্বার্থে কাজ করে,
তখনই দেখা
দেয় নানা
ধরনের বিশৃঙ্খলতা
। তাই দুনীতি
জাতির জীবনে
একটি ভয়াবহ
ব্যাধির মতাে
খুবই স্বল্প
সময়ের মধ্যে
ছড়িয়ে পড়ে
সর্বত্রই । দুর্নীতিগ্রস্ত
যেকোনাে দেশে
অতি দ্রুত
ভেঙে পড়ে
তার প্রশাসনিক
ব্যবস্থা, ফলে দেশের
প্রচলিত আইন-কানুন,
নিয়ম-শৃঙ্খলা
বলে আর কিছুই
অবশিষ্ট থাকে
না। ফলে সুযােগ-সন্ধানীগােষ্ঠী
দ্রুত গড়ে
তােলে সম্পদের
বিশাল পাহাড়।
অন্যদিকে, দরিদ্র
মানুষের জীবনে
নেমে আসে ভয়াবহ
অমানিশা, তারা
দারিদ্রের সর্বনিম্ন
পর্যায়ে পৌঁছে
যায় । ফলে
সমাজে ধনী ও
দরিদ্রের বিরাট
পার্থক্য পরিলক্ষিত
হয়। এ অবস্থায়
দেখা দেয়
খুন, রাহাজানি,
ধর্ষণ, চুরি,
ডাকাতি, ছিনতাই,
হানাহানিসহ নানা
ধরনের অপকর্ম
। রাষ্ট্রের
মধ্যে দেখা
যায়, বিভিন্ন
ধরনের দলাদলি,
বিশ্বাস-অবিশ্বাসের
মেঘমালা; গণতান্ত্রিক-ব্যবস্থা
সম্পূর্ণরূপে ভেঙে
পড়ে। ফলে, লাগামহীন
স্বেচ্ছাচারিতার রাজত্ব
কায়েম হয়।
পৃথিবীর প্রায়
সবদেশেই দুর্নীতি
একটি জটিল
সমস্যা হিসেবে
দেখা দিয়েছে
। তবে উন্নত
দেশগুলােতে এর মাত্রা
সহনশীলতাকে অতিক্রম
করেনি। অন্যদিকে,
বাংলাদেশসহ অন্যান্য
উন্নয়নশীল কিংবা
অনুন্নত দেশে
এর মাত্রা
ইতােমধ্যেই সীমা
ছাড়িয়ে ফেলেছে
। এক্ষেত্রে
বাংলাদেশ একটি
আলােচিত নাম ।
প্রথমত, যে অসাম্প্রদায়িক
আর উন্নয়নের
চেতনা নিয়ে
বাংলাদেশ স্বাধীন
হয়েছিল, তা আজও
বাস্তবায়িত হয়নি;
প্রতিষ্ঠিত হয়নি
সর্বস্তরে মাতৃভাষা
বাংলার ব্যবহার
। বরং সামাজিক,
অর্থনীতিক আর সাংস্কৃতিক
ক্ষেত্রে ঘটেছে
ব্যাপক দুবৃত্তায়ন
। দুর্নীতির
দুষ্ট ক্ষতকে
স্বাধীনতার প্রায়
অর্ধশত বৎসর
পার হতে চলল-তবুও
নিরাময় করা যায়নি
। পারিবারিক,
সামাজিক, রাষ্ট্রীয়সহ
এমন কোনাে
স্থান নেই যেখানে
দুনীতি নেই।
চাকরি, ব্যবসায়,
বাণিজ্যে সীমাহীন
ঘুষের দৌরাত্মে
জনমনে ব্যাপক
হতাশা বিরাজ
করে। অনেকের
ধারণা। এদেশের
আমলাতান্ত্রিক জটিলতাই
মুখ্য। কিন্তু
এছাড়াও রয়েছে
বিভিন্ন রাজনীতিক
দলের প্রচণ্ড
মাত্রার স্বেচ্ছাচারিতা,
ক্ষমতা আঁকড়ে
ধরে রাখার
হীন-মানসিকতা
। সব সরকারের
সময় প্রায়
সর্বত্রই নিয়ােগ
হয় সেই সরকারের
রাজনীতিক দলের
পরিচয়ে। ফলে লেজুড়বৃত্তি
রাজনীতি চর্চার
কুফল পড়ে
দেশের মানুষের
ওপর। এ অবস্থায়
গ্রাম-গঞ্জেও
চলে সাংঘাতিক
মাত্রার মহাজনী
সুদের ব্যবসায়।
ফলে গ্রামীণ
অর্থনীতি মারাত্মক
হুমকির মুখে
পড়ে। সরকার
এবং প্রশাসনের
দুর্বলতাকে পুঁজি
করে আইন-শঙ্খলা
রক্ষাকারী বাহিনীতে
মাঝে-মধ্যেই
ব্যাপক অনিয়মের
অভিযােগ পত্র-পত্রিকার
পাতা খুললেই
পাওয়া যায়।
শিশু খন ধর্ষণসহ
নানাবিধ অপরাধ
বাংলাদেশের অর্থনীতিকে
মারাত্মকভাবে পিছিয়ে
দিচ্ছে। বিশ্বব্যাংক
বাংলাদেশের দুর্নীতি
বিষয়ে এক প্রতিবেদনে
উল্লেখ করেছে,
বাংলাদেশে দুর্নীতির
ব্যাপকতা রােধ
করা গেলে
জিডিপির প্রবৃদ্ধি
২-৩ শতাংশ
বেড়ে যেত এবং
মাথাপিছু আয় দ্বিগুণ
হতাে। তাই শুধু
বাংলাদেশই নয়, বরং
দুর্নীতিগ্রস্ত যেকোনাে
দেশের চিত্রই
এরুপ । কিন্তু
এ অভিশাপ
থেকে মুক্তি
পাওয়া অসম্ভব
কিছু নয়।
বরং সর্বস্তরের
মানুষের সদিচ্ছাই
যথেষ্ট। এক্ষেত্রে
শুধু সরকারকে
দোষ দিলে
চলবে না। একটি
জাতির অনেক
ভালাে অর্জনও
থাকে তাই এই
দুনীতি যেন ম্লান
করে দিতে
না পারে,
সেদিকে সকলের
নজর দিতে
হবে । আর
নীতি-নৈতিকতার
চর্চা এবং সুশাসন
প্রতিষ্ঠার মধ্য
দিয়ে দুর্নীতিকে
উচ্ছেদ করা যেতে
পারে।
দুর্নীতি
জাতির উন্নতির
প্রধান অন্তরায়।
দুর্নীতির অভিশাপ
থেকে জাতিকে
মুক্ত হতে হলে
সকলের ঐক্যবদ্ধ
প্রয়াস একান্ত
প্রয়ােজন । তবেই
একটি জাতি
সুখী, সমৃদ্ধ
দেশ গড়ে
তুলতে পারে
।
Share This Post
Post Comments (10)
Stayler_eysl
Dyson_dpon
Dayson_ccKt
oborudovan_vpEt
mikrozaym_fvoi
casino_ljmi
Kvartiry_ulKr
Doma_qkEi
barber_yfMl
dostavka_kfsl